ওয়ার্ল্ড বাংলা রিপোর্ট :: আপনার কেউ যদি ইতালি থাকে অথবা না থাকলেও আপনি ইতালিয়ান ট্যুরিস্ট ভিসার জন্য আবেদন করতে পারেন। তবে এই ক্ষেত্রে যদি আত্মীয়র মধ্যে কেউ ইতালিতে থেকে থাকে এবং আপনাকে বিভিন্ন কাগজ পত্র দিয়ে সাহায্য করে তাহলে ভিসা পাওয়ার সম্ভাবনা অনেকাংশে বেড়ে যায়। তাহলে আসুন জেনে নেই ইতালির ট্যুরিস্ট ভিসার আবেদনের জন্য কিভাবে কি করতে হয়? বা কি কি ডকুমেন্টন্স প্রয়োজন?
ইতালির ট্যুরিস্ট ভিসার জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্রঃ
১- “সি” (C) টাইপ ভিসা ফরম ( সম্পূর্ণরুপে সম্পন্ন এবং আবেদনকারী কর্তৃক স্বাক্ষরিত ) আবেদনকারী ১৮ বছরের নিচে হলে ভিসা ফরম পিতা/মাতা স্বাক্ষর করবে এবং স্বাক্ষর প্রমানসরুপ পিতা / মাতার বাংলাদেশ সরকার অনুমদিত পরিচয় পত্র সহকারে আবেদনকালিন সময়ে উপস্থিত থাকতে হবে।
২- পাসপোর্ট কমপক্ষে ১৮০ দিন পর্যন্ত বৈধ এবং অন্তত উভয় দিকে ফাঁকা ১টি খালি পৃষ্ঠা থাকতে হবে সাথে ( সকল ভিসা পেজ এর কপি- যদি এর আগে অন্য কোন দেশের ভিসায় ভ্রমন করে থাকেন )।
৩- সম্প্রতিক সময়ে তোলা পাসপোর্ট সাইজ ও ধরনের দুই কপি রঙ্গিল ছবি। ( ৬ মাসের মধ্যে তোলা ছবি হতে হবে এবং ব্যাকগ্রাউন্ড অবশ্যই সাদা হতে হবে )
৪- চাকুরিজীবিদের জন্যঃ
ক) নিয়োগপত্র, খ) বেতন বিবৃতি / গত ছয় মাসের বেতন স্লিপ ( আসল + ফটোকপি )
ব্যবসায়িক/ নিয়োগকর্তাদের জন্যঃ
ক) আবেদনকারীর কোম্পানি রেজিস্ট্রেশন ডকুমেন্ট, খ) ইনকরপোরেশন সার্টিফিকেট, গ) মেমোরেনডাম অব আর্টিকেল এন্ড এসোসিয়েশন (শেয়ারহোল্ডারদের নামের তালিকা পাতা সাথে প্রথম দুই পাতা কপি এবং শেষ পাতার কপি) ঘ) স্থানীয় চেম্বার অব কমার্স সঙ্গে বৈধ সদস্যপদ সার্টিফিকেট, ঙ) ট্যাক্স/টিন নম্বর, চ) ভ্যাট রেজিস্ট্রেশন নম্বর, ছ) ট্রেড লাইসেন্স ( মুল + ফটোকপি)।
৫- ব্যাংক স্টেটমেন্ত- গত ছয় মাসের সম্প্রতি তুলে আনতে হবে (ব্যক্তিগত ও কোম্পানির, আসল ও ফটোকপি), ক্রেডিট কার্ড স্টেটমেন্ট (যদি থাকে)।
৬- সঙ্গী অথবা পরিবারের সদস্যদের জন্য অতিরিক্ত ডকুমেন্টঃ
• স্বামী বা স্ত্রীর জন্য (বিয়ের সার্টিফিকেট) যেমন স্বামী তার স্ত্রী কে টুরিস্ট ভিসার জন্য আবেদন করলে এই সার্টিফিকেট লাগবে।
• শিশুদের ক্ষেত্রে ( জন্মের সার্টিফিকেট )।
• শিক্ষার্থীদের ক্ষেত্রে ( আইডি কার্ড ফটোকপি সহ স্কুল থেকে আনুমোদন চিঠি)।
• পরিবারের কারো ক্ষেত্রে ফ্যামিলি সার্টিফিকেট (সার্টিফিকেটটি পরিবারের প্রধান এর নামে ইস্যু হবে এবং পরিবারের প্রধানসহ সকল সদস্যের নাম অন্তর্ভুক্ত করতে হবে)।
• শিশুদের মধ্যে কেউ যদি বাবা অথবা মা দুই জনের একজন ছাড়া শুধু বাবার সাথে অথবা মার সাথে ভ্রমন করে, সেই ক্ষেত্রে পিতা/মাতার অনাপত্তিপত্র প্রদান করতে হবে।
৭- অনেক গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়ঃ টুরিস্ট ভিসার জন্য “লেত্তেরা ডি ইনভিতো” (lettera di invito) invitation letter তথা আমন্ত্রনপত্র অনেক বড় ভুমিকা পালন করে, যেমন আপনি আপনার ভাই এর জন্য এই আমন্ত্রনপত্র পাঠাতে পারেন, যা আপনার ভাইকে এই ভিসা পেতে অনেক বেশি কার্যকারী ভুমিকা পালন করে।তবে সেই সাথে সাথে আপনার ইতালিয়ান ব্যাংক একাউন্ত থেকে ৬ মাসের ব্যাংক স্টেটমেন্ট দেখাতে হবে এবং সে আপনার কাছে আসার পর তার ভ্রমন কালিন থাকা খাওয়ার খরচ বাবদ ইত্যাদি বিষয় আপনি বহন করবেন যদি সে ব্যর্থ হয়। সেই মর্মে আপনার ব্যাংকে সাড়ে তিন হাজার ইউরো সমপরিমান টাকা জমা রাখতে হবে, উল্লেখ্য অনেকের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট নেই, অথবা থাকলেও সেই পরিমান অর্থ নেই।তাই বলে কি আপনি আপনার ভাই,বোন অথবা বন্ধু কে ইনভাইট করতে পাড়বেন না? হ্যাঁ এর উত্তরঃ অবশ্যই পাড়বেন।যাদের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট নেই বা ব্যাংকে সেই পরিমান টাকা নেই, তাদের জন্য ইতালিতে এক ধরনের ইনস্যুরেন্স কোম্পানি রয়েছে যারা ২৫০, ৩০০ ইউরোর বিনিময়ে এই ধরনের বিমা গুলো করে থাকে, যার মাধ্যমে আপনার ভাই ইতালিতে আসার পর যদি কোন সমস্যায় পড়ে,তখন তার থাকা খাওয়ার খরচ এই ইনস্যুরেন্স কোম্পানি বহন করবে, যাকে ইতালিয়ান ভাষায় বলা হয় “ফিডেইয়ুসসিওনে বাঙ্কারিয়া”( Fideiussione bancaria)Bank Guarantee ব্যাংক গ্যারান্টি।
৮- ব্যাংক গ্যারান্টির সাথে সাথে তার স্বাস্থ্যগত সমস্যার কারনে কমপক্ষে ৩০০০০ ইউরোর বিদেশে অবস্থানকালীন সময়ের জন্য মেদিকেল ইনস্যুরেন্স কভারেজ কাগজপত্র দেখাতে হবে, এর মানে আপনাকে দুই ধরনের বিমা করতে হবে ১- একটি হচ্ছে ব্যাংক গ্যারান্টি সংক্রান্ত বিমা, যা ইতালিয়ান দূতাবাসকে নিশ্চিত করছে যে, তার বিদেশ ভ্রমন কালিন থাকা খাওয়া সংক্রান্ত কোন সমস্যা হলে ব্যাংক এই বিষয়ে সাহায্য করবে এবং ২- মেডিকেল ইনস্যুরেন্স, যা উনার বিদেশে ভ্রমণ কালিন শারীরিক কোন সমস্যায় পড়লে ডাক্তার খরচ সহ মেডিসিন খরচ বহন করবে।
৯- রিটার্ন এয়ার টিকেট বুকিং তথা টিকেট বুকিং পিএনআর নাম্বার এর (মূল ও ফটোকপি দিতে হবে)
১০- ইতালি দূতাবাস প্রয়োজনে আরও ডকুমেন্টশনের জন্য আনুরোধ করার অধিকার সংরক্ষণ করে।
১১- ভিসা আবেদন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে কমপক্ষে ৩০ ক্যালেন্ডার দিন প্রয়োজন হতে পারে। তবে বর্তমানে এর চাইতেও বেশি সময় নিয়ে থাকে দূতাবাস।