আজ সবার সব পথ এসে মিলবে এক অভিন্ন গন্তব্যে। সেই গন্তব্য কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার, বাঙালি জাতিসত্তার ঐতিহ্যের মিনার। ভেদাভেদ ভুলে নারী, পুরুষ বসন্তে ফোটা ফুলের স্তবক হাতে নিয়ে ধীর পায়ে এগিয়ে যাবে মিনারের দিকে। কণ্ঠে থাকবে চির অম্লান সেই গান ‘আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি/আমি কি ভুলিতে পারি…’ ভাষা শহীদদের প্রতি অন্তরের অন্তস্তল থেকে নিবেদিত শ্রদ্ধার ফুলে ফুলে বর্ণিল হয়ে যাবে শহীদ মিনারের বেদি। আজ অমর একুশে ফেব্রুয়ারি, রক্তস্নাত ভাষা আন্দোলনের স্মৃতিবহ মহান শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস।
আজ থেকে ৬৫ বছর আগে বাংলা মায়ের বীর সন্তানেরা মাতৃভাষার সম্মান রক্ষার্থে ১৯৫২ সালের এ দিনে বুকের রক্তে রঞ্জিত করেছিলেন ঢাকার রাজপথ। পৃথিবীর ইতিহাসে সৃষ্টি হয়েছিল মাতৃভাষার জন্য রফিক, সালাম, বরকত, সফিউর, জব্বারদের আত্মদানের অভূতপূর্ব নজির। তাদের রক্তে শৃংখলমুক্ত হয়েছিল দুঃখিনী বর্ণমালা, মায়ের ভাষা- বাংলা। বাঙালি জাতিসত্তা বিকাশের যে সংগ্রামের সূচনা সেদিন ঘটেছিল, মুক্তিযুদ্ধের গৌরবময় পথ বেয়ে স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের মধ্য দিয়ে তা চূড়ান্ত পরিণতি লাভ করে। একুশে ফেব্রুয়ারি তাই বাঙালির কাছে চির প্রেরণার প্রতীকে পরিণত হয়েছে।
মাতৃভাষার জন্য বাঙালির আত্মদানের এ অনন্য ঘটনা স্বীকৃত হয়েছে আন্তর্জাতিক বিশ্বে। ১৯৯৯ সালে ইউনেসকো একুশে ফেব্রুয়ারিকে ঘোষণা করে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস। আজ বাঙালির সঙ্গে সারা বিশ্বে দিনটি পালিত হচ্ছে। একুশের প্রথম প্রহর থেকেই জাতি কৃতজ্ঞচিত্তে ভাষা শহীদদের স্মরণ করছে। বরাবরের মতোই এবারও মাতৃভাষা দিবস উদযাপনের প্রস্তুতি শুরু হয় সোমবার বিকালেই। রাজধানীর দোয়েল চত্বর, চানখাঁরপুল, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি, পলাশী মোড় থেকে শহীদ মিনারগামী পথগুলোতে যানবাহন চলাচল বন্ধ করে দেয়া হয়। এসব পথে ঐতিহ্যবাহী আলপনা আঁকতে ব্যস্ত হয়ে ওঠেন চারুকলা অনুষদের নবীন শিল্পীরা।
[yottie channel=”https://www.youtube.com/channel/UCGZiS_x0osNtzp84CWjX-iw” content_drag_control=”false” content_auto_pause_on_hover=”true”]