ব্রিটিশদের ‘ব্রিটিশনেস’ গোটা পৃথিবীতে ছড়িয়ে দিচ্ছেন এক বাঙালি, যা কিনা খোদ ব্রিটিশরাও করতে হিমশিম খাচ্ছিল। ব্রিটিশ রাজনীতিবিদ জর্জ অসবর্ন বলেছিলেন, ইউকে এর ছোট ছোট প্রতিষ্ঠানগুলো ব্রিটিশ পণ্য বাইরের দেশে পাঠাতে ব্যর্থ। আর সেই ব্যর্থ উদ্যোক্তাদের মাঝে আশার আলো হয়ে উঠেছেন বাংলাদেশি বংশোদ্ভুত ব্রিটিশ নাগরিক মামুন চৌধুরি। তিনি লন্ডনের ঐতিহ্যবাহী ডাফেল কোট রপ্তানি করছেন বিভিন্ন দেশে। লন্ডনের পশ্চিমের শেষ প্রান্তে হ্যাকনি উইকে ছোট একটি কারখানা মামুনের। ১৯৯১ সালে বাংলাদেশ থেকে লন্ডনে পাড়ি দেন। ফাঁকা পকেট নিয়ে আসলেও বুক ভরা স্বপ্ন নিয়ে পোশাক খাত নিয়ে কিছু করতে আগ্রহী হয়ে ওঠেন। ডাফেল কোট তার নজর কাড়ে। লন্ডনে প্রতিযোগিতা চরম হলেও তিনি ছিলেন বদ্ধপরিকর। ২০০২ সালে ‘লন্ডন ট্র্যাডিশন’ নামের একটি প্রতিষ্ঠান খোলেন। লন্ডনের অন্যান্য ছোট ছোট প্রতিষ্ঠানগুলো যেখানে পোশাক খাত নিয়ে হা-পিত্যেশ করছে, সেখানে মামুনের ভিন্ন ধারার চিন্তা ও পরিকল্পনা হিট হয়ে গেলো। পৃথিবীর অন্যান্য দেশে যে ব্রিটিশরা থাকেন তাদের কাছে পোশাক বলতে চাহিদার বস্তুতে পরিণত হলো মামুনের তৈরি ডাফেল কোট। বর্তমানে এই বাঙালি তরুণের প্রতিষ্ঠান বছরে ৩০-৩৫ হাজার পিস ডাফেল কোট বিভিন্ন দেশে রপ্তানি করছে। ২০০৭-২০১৩ সালের মধ্যে বাইরের দেশে এর বিক্রি ৮৬৫ শতাংশ বেড়ে যায়। ২০১৪ সালে জুলাইয়ে তার প্রতিষ্ঠান কুইনস অ্যাওয়ার্ড ফর ইন্টারন্যাশনাল ট্রেড জিতে নিয়েছে। লন্ডনের মেয়র বোরিস জনসন মামুনের এবং তার প্রতিষ্ঠানের ভূয়সী প্রশংসা করেছেন। অলিম্পিক পার্কের কাছাকাছি হ্যাকনি উইকের কারখানা থেকে যাবতীয় ডাফেল কোট প্রস্তুত হচ্ছে। ১৯০০ সালের দিকে এই অঞ্চলটি পুরুষদের টেইলরিংয়ের প্রতিষ্ঠানে পরিপূর্ণ ছিল। এরপর ১৯৭০ এবং ৮০-এর দশকে এখানকার শিল্প সাম্রাজ্যের জৌলুস কমে যায়। কিন্তু এখন আবার মামুনের কারণে এই অঞ্চলটি আবার তার পুরনো চেহারা ফিরে পাওয়ার স্বপ্ন দেখছে।