জাপানের বিচার মন্ত্রণালয় দেশটিতে বিদেশি নাগরিকদের স্থায়ীভাবে বসবাসের আবেদনের ক্ষেত্রে ব্যাপক পরিবর্তনের ঘোষণা দিয়েছে। নতুন নিয়ম অনুযায়ী, পর্যাপ্ত পয়েন্ট অর্জন করতে পারলে যে কেউ মাত্র এক বছরেই দেশটিতে স্থায়ী হওয়ার সুযোগ পাবেন।
চলতি বছরের মার্চ থেকে নতুন নিয়ম কার্যকর হবে বলে শনিবার জাপানের অভিবাসন ব্যুরো জানিয়েছে।
বিদেশি দক্ষ পেশাজীবীদের জাপানে বসবাস উৎসাহিত করতে অভিবাসনের আগের নিয়ম সংস্কার করে এ পরিবর্তন আনা হয়েছে বলে জানিয়েছে তারা।
আগে স্থায়ী বসবাসের আবেদনের ক্ষেত্রে দেশটিতে ন্যূনতম ১০ বছর থাকতে হতো। ২০১২ সালে জাপান সরকার ওই নিয়ম বদলে ‘পয়েন্ট সিস্টেম’ চালু করে। সেবার থেকে আবেদনের ক্ষেত্রে ন্যূনতম থাকার সময় কমিয়ে পাঁচ বছর করা হয়।
গত মঙ্গলবার দেশটির বিচার বিভাগ তিন বছর আগের ওই নিয়ম সংস্কারের ঘোষণা দেয়। এতে ডক্টরেট পাওয়া বিদেশিদের জন্য ৩০ এবং স্নাতকোত্তর ডিগ্রীধারীদের জন্য ২০ পয়েন্ট নির্ধারণ করা হয়।
শিক্ষক, গবেষক কিংবা অ্যাকাডেমিক ক্ষেত্রে পেশাজীবীরা জাপানে ৩-৭ বছর কাজ করলে ৫ থেকে ১৫ পয়েন্ট পাবেন।
জাপানি কারিগরি প্রতিষ্ঠানে ৩ থেকে ১০ বছরের কাজের অভিজ্ঞতা থাকলে মিলবে ৫ থেকে ২০ পয়েন্ট। ব্যবসায়ীদের ক্ষেত্রে একই সময়ের জন্য দেওয়া হবে ৫ থেকে সর্বোচ্চ ২৫ পয়েন্ট।
বাৎসরিক আয় ও জাপানের কোনো প্রতিষ্ঠানে বিনিয়োগকারী বিদেশিরা পেতে পারেন ১০ থেকে ৫০ পয়েন্ট।
জাপানি প্রতিষ্ঠানে ভালো গবেষণাকর্মের স্বীকৃতি থাকলে সর্বোচ্চ ২৫ পয়েন্ট মিলবে।
এছাড়া অন্তত ৪টি বিশেষ ক্ষেত্রে দক্ষতা অর্জনকারী বিদেশিরা পাবেন ২০ বোনাস পয়েন্ট। সঙ্গে জাপানি ভাষায় দক্ষতা থাকলে মিলবে আরও ১৫।
সব যোগ করে ৭০ পয়েন্ট হলে তিন বছর জাপানে বসবাস করছেন এমন বিদেশিরা স্থায়ী হওয়ার আবেদন করতে পারবেন; আর ৮০ পয়েন্টধারীদের ক্ষেত্রে এ সুযোগ মিলবে এক বছরেই।
নতুন এ নিয়মের ফলে বিদেশিরা সহজে দেশটিতে স্থায়ী হওয়ার সুযোগ পাবেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।
অভিবাসন নীতিতে এ পরিবর্তন বাংলাদেশিদের জন্যও সুযোগ বয়ে আনবে বলে মনে করছেন জাপানে পড়তে আসা শিক্ষার্থী জুবায়েদ আল মামুন।
“এখন একজন পিএইচডি শেষ করেই পার্মানেন্ট রেসিডেন্সির আবেদন করার সুযোগ পাবেন। আগে পিএইচডির পর চাকরিও করতে হত। তারপর আয়করের উপর নির্ভর করে রেসিডেন্সি মিলত।”
জাপানে এখন ১০ হাজারের মত প্রবাসী বাংলাদেশি আছেন জানিয়ে জুবায়েদ বলেন, এদের অনেকেই দীর্ঘদিন বসবাস করে স্থায়ী হওয়ার সুযোগ পেয়েছেন।
“নতুন পদ্ধতিতে আরও বেশি সংখ্যক বাঙালি জাপানে থাকার সুযোগ পাবেন বলে মনে হচ্ছে।”