কুঁড়োঘরে থেকেও এবার বিশ্ববাজার দখলের স্বপ্ন দেখতে পারেন, সোনারানী। দিনাজপুর চিরির বন্দরের এক প্রত্যান্ত গ্রাম দুমুখাডাঙ্গী থেকে বিশাল সফলতা ছিনিয়ে এনেছেন, এই দরিদ্র গৃহবধু। তার হাতে তৈরি নকশীকাঁথা স্পেনের আন্তর্জাতিক হস্তশিল্প মেলায় পেয়েছে ‘সেরা’ পুরস্কার । যার নাম ‘লোয়েভে ক্রাফট প্রাইজ’ । বিশ্বখ্যাত লোয়েভে ফাউন্ডেশন বিশ্বের ঐতিহ্যবাহি হস্তশিল্প নিয়ে এই আয়োজন করে । দুমুখাডাঙ্গীর লেখাপড়া না জানা এই দরিদ্র গৃহবধুকে এমন খ্যাতি এনে দিতে সহযোগিতা করেছে, বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা কেয়ারের সামাকিজ ব্যবসা লিভিং ব্লু। সংস্থাটির মাধ্যমে তিনি ঘুরে এসেছেন, যুক্তরাষ্ট্র। পুরস্কার নিতে এপ্রিলে যাচ্ছেন, স্পেনে। তার সাথে কথা বলতে দিনাজপুরের ওই গ্রামে যাচ্ছেন দেশী-বিদেশী সাংবাদিকরা। রীতিমতো নকশীকাঁথার তারকাই বরে গেছেন তিনি।
২০০৬ সালে কেয়ার বাংলাদেশ প্রথমে তাদের দিয়ে নকশীকাঁথা তৈরি করে। নকশা দিয়েছিলেন, কেয়ারের কর্মকর্তারাই। এখন সোনারানী নকশীকাঁথার কোম্পানি খুলে বসেছেন। নিজে পরিচালক। তার সাথে কাজ করছেন, গ্রামের বউ-ঝিদের অনেকেই।
তারা তৈরি করছেন, চৌয়ারী ঘর, ময়ুরপাখা, মৌমাছির চাক, পুটি মাছের ঝাঁকসহ নানা নকশার কাঁথা। এক একটি নকশিকাঁথা তৈরিতে একজনের সময় লাগছে ২০/২৫ দিন। যার মজুরি আড়াই হাজার টাকার মতো।
সোনারানীর যে কাঁথাটি এবার স্পেনে সেরা হয়েছে তার নাম ‘সাদা ময়ুর’ । সোনারানী বাংলার এই ঐতিহ্য বিশ্বব্যপী ছড়িয়ে দিতে একটি বড়সর নকশীকাঁথা কারখানা খুলতে চান। খুব শিগগির তার এই প্রত্যাশা হয়তো পুরনও হবে।