মানুষের মৃতদেহ সৎকারের বিতর্কিত ‘পরিবেশ বান্ধব পদ্ধতি’ আমেরিকা, কানাডার পর এর চালু হতে যাচ্ছে বৃটেনেও। যার নাম এলকালইন হাইড্রোলাইসিস। যাতে এক মেশিনের মধ্যে প্রচন্ড তাপ ও এসিডের মাধ্যমে মানবদেহ পুড়িয়ে নিঃশেষ করা হবে। পাউডার হয়ে যাবে হাড়গোড়ও।
মৃত্যুর পর ধর্মীয় রীতি বা বিশ্বাস অনুযায়ী মানবদেহ কবর দেয়া অথবা দাহ করা হয়। কিন্তু উন্নত বিশ্বের কিছু দেশ মনে করছে, এর ফলে যেমন কবরের জন্য জায়গা খরচ হচ্ছে, সৎকারের জন্য কাঠ-জ্বালানি লাগছে। কোন কোন কোন ক্ষেত্রে পরিবেশ দুষণ হচ্ছে।
তাই এসব এড়াতে এলকালাইন হাইড্রোলাইসিস নামের একটি মেশিন তৈরি করেছে বৃটিশ কোম্পানি রেসোশেন নামের একটি বৃটিশ কোম্পানি । আমেরিকা কানাডাসহ বিভিন্ন দেশে এধরনের মেশিন দিয়ে ১৪টি সৎকার কেন্দ্র চালু হয়েছে। ওইসব দেশে যারা মৃতদেহ কবর দিতে চাননা তাদের ৮০ ভাগই এই পদ্ধতি পছন্দ করছেন।
এলকালাইন হাইড্রোলাইসিস হচ্ছে- ৬ ফুট উচু, চারফুট চওড়া এবং ১০ ফুট গর্তের একটি মজবুত শক্তিশালী ধাতব মেশিন। যার সামনে ব্যাংকের ভল্ট বা বড় সিন্দুকের মতো একটি দরোজা আছে। একটি ট্রের উপর মৃতদেহটি রেখে তা ওই মেশিনের মধ্যে ঢুকিয়ে দেয়া হয়। এরপর অটোমেটিকভাবে ওই মৃতদেহের উপর ছিটানো হয় হাইড্রোক্সাইড এসিড। তারপর ৩০০ ডিগ্রি তাপমাত্রায় দেড় থেকে ৪ ঘন্টা পর্যন্ত পোড়ানো হয় মৃতদেহ। এতে মৃতদেহের সব মাংস গলে তরল হয়ে যায়। পড়ে থাকে হাড়গুলো। পরে তা বের করে অন্য একটি মেশিনে ময়দার মতো গুড়ো করে ফেলা হয়।
নামের এক মেশিনে এসিড ও তাপে পুড়িয়ে ধ্বংস করা হয় মৃতদেহ। আমেরিকায় এমন একটি সৎকার কেন্দ্রের কর্মকর্তা জানিয়েছেন, কবরে মৃতদেহ যেমন কয়েক মাসে পচেগলে প্রাকৃতিগতভাবে মাটির সাথে মিশে যায় তেমনিই হয় এই মেশিনে মাত্র ২/৩ ঘন্টায়।
বৃটেনের বার্মিংহাম শহরের কাছে এ বছরই এমন একটি সৎকার কেন্দ্র বসানো শেষ হচ্ছে। এতে সৎকার খরচ আর সময় অনেক কমে যাবে বলেও ধারনা করছেন, কর্তৃপক্ষ। তবে এই পদ্ধতি নিয়ে ধর্মীয় নানা দৃষ্টিকোন থেকে বিতর্কও শুরু হয়ে গেছে , বৃটেনে।